বাংলাদেশে সরকার প্রতি বছর বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি চালু করে, যার মাধ্যমে দেশের অতি দরিদ্র জনগণ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা পায়। তার মধ্যে ভিজিডি (VGD) বা Vulnerable Group Development Card একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্ড যা অতি দরিদ্র নারীদের খাদ্য সহায়তা ও সামাজিক সুরক্ষা প্রদান করে থাকে। এই কার্ডের মাধ্যমে সুবিধাভোগী নারীরা ৩০ কেজি চাল সহ বিভিন্ন সহায়তা পাবে। চলতি ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে ভিজিডি কার্ডের আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আজকের ব্লগে আমরা এই আবেদন প্রক্রিয়া, যোগ্যতা, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানাবো।
ভিজিডি কার্ডের আবেদন প্রক্রিয়া কীভাবে শুরু হবে?
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জন্য ভিজিডি কার্ডের আবেদন ১ জানুয়ারি ২০২৫ থেকে শুরু হবে এবং ৩০ ডিসেম্বর ২০২৬ পর্যন্ত চলবে। এই সময়ের মধ্যে যারা আবেদন করতে চান, তাদের একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। তবে, প্রথমেই জানিয়ে রাখি যে, আগের বছরের আবেদনকারীদের মধ্যে অনেকের আবেদন পদ্ধতিতে সার্ভার সমস্যা হয়েছে এবং অনেকেই আবেদন করতে পারেননি। তাই, যারা আবেদন করতে চান, তাদের অবশ্যই সঠিক সময়ে এবং সঠিকভাবে আবেদন করতে হবে।
ভিজিডি কার্ডের জন্য আবেদনকারী কে হতে পারে?
ভিজিডি কার্ডের জন্য আবেদনকারী নারীদের শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ এবং কর্মক্ষম হতে হবে। এই কার্ডটি অতি দরিদ্র, বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত, স্বামী পরিত্যক্ত, অথবা ভূমিহীন নারীদের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। এছাড়া, যারা পেশাদারভাবে কৃষি শ্রমিক, রিক্সা বা ভ্যানচালক, কামার, কুমার, মুচি, বা যেকোনো প্রান্তিক পেশায় নিয়োজিত, তাদের জন্যও এই কার্ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আবেদনের জন্য ন্যূনতম বয়স ২০ বছর এবং সর্বোচ্চ বয়স ৫০ বছর হতে হবে। আবেদনকারী যদি সরকারের অন্য কোনো সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধাভোগী না হন, তবে তাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
আবেদন করার যোগ্যতা
১) আবেদনকারী নারীর বয়স ২০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে হতে হবে।
২) আবেদনকারী যদি ভূমিহীন হন অথবা ০.১৫ একর (১৫ শতাংশ) বা তার কম জমির মালিক হন, তবে তিনি ভিজিডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
৩) পরিবারের যদি কোনো স্থায়ী আয়ের উৎস না থাকে এবং পরিবারে কোনো উপার্জনক্ষম সদস্য না থাকে, তাহলে তিনি আবেদন করতে পারবেন।
৪) পরিবারের সদস্য সংখ্যা, পেশা, এবং অন্যান্য তথ্য যেমন, পরিবারের সৌচাগার, বিদ্যুৎ সংযোগ, টিউবওয়েল থাকা বা না থাকা, এই সমস্ত তথ্য আবেদন ফরমে দিতে হবে।
ভিজিডি কার্ড অনলাইন আবেদন ফরম পূরণ
ভিজিডি কার্ডের আবেদন ফরমে প্রথমেই আবেদনকারীর নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, স্বামীর নাম, জন্ম তারিখ, মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, স্থায়ী ঠিকানা ইত্যাদি বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে। এছাড়া, আবেদনকারীর পরিবারের সদস্য সংখ্যা, পরিবারের উপার্জনকারী সদস্যের পেশা, এবং পরিবারের যেসব সুবিধা (যেমন, বিদ্যুৎ, টিউবওয়েল, সৌচাগার) আছে বা নেই, তা উল্লেখ করতে হবে।
একই সঙ্গে আবেদনকারীর যদি ১৫ থেকে ১৮ বছরের অবিবাহিত মেয়ে থাকে, অথবা পরিবারের মধ্যে অটিজম, প্রতিবন্ধী, এসিড সারভাইভার সদস্য থাকে, সেক্ষেত্রে ওই নারীর আবেদন বিশেষভাবে গুরুত্ব পাবে।
ভিজিডি কার্ড অনলাইন আবেদন কোথায় করা যাবে?
ভিজিডি কার্ডের জন্য আবেদন অনলাইনে এবং অফলাইনে উভয় পদ্ধতিতেই করা যাবে। অনলাইনে আবেদন করতে, আবেদনকারীকে “ডিডব্লিউবিডি” বা “মাইগভ বিডি” পোর্টাল ব্যবহার করতে হবে। তবে, যেসব এলাকা যেখানে ইন্টারনেট সংযোগ নেই বা খুব দূরবর্তী, সেখানে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অফলাইনে আবেদন করা যাবে।
এছাড়া, টোল ফ্রি হটলাইন ৩৩৩ নম্বরে কল করেও আবেদন করা যাবে। ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তারা আবেদন প্রক্রিয়ায় সহায়তা প্রদান করবেন, এবং “জাতীয় মহিলা সংস্থা” বা “তথ্য আপা” প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামীণ নারীদের আবেদন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করা হবে।
ভিজিডি কার্ড অনলাইন আবেদন যাচাই-বাছাই
আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর, একটি যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শুরু হবে। এই প্রক্রিয়া চলাকালীন, আবেদনকারীর জীবনযাত্রার মান এবং বাস্তব অবস্থা সরজমিনে যাচাই করা হবে। বিশেষভাবে, যারা পূর্ববর্তী চক্রের অপেক্ষমান তালিকায় ছিলেন, তারা নতুন চক্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই শেষে সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে প্রাথমিক তালিকা তৈরি করা হবে। যদি কোনো আবেদনকারী অসত্য তথ্য প্রদান করেন, তবে তার আবেদন বাতিল করা হবে।
ভিজিডি কার্ডের সুবিধাসমূহ
ভিজিডি কার্ডধারীরা ৩০ কেজি চাল পাবেন। এছাড়া, সরকারের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় ওই নারীদের সঞ্চয়, জীবিকার দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সচেতনতা, এবং বিভিন্ন সাহায্য প্রদান করা হবে। এই কার্ডের মাধ্যমে, সুবিধাভোগী নারী নিজে এবং তার পরিবারের জন্য সচ্ছলতার দিকে একধাপ এগিয়ে যেতে পারবেন।
আবেদনকারীদের জন্য বিশেষ নির্দেশনা
১. ভিজিডি কার্ডে এক পরিবারের একজন সদস্যই সুবিধা পাবে।
২. আবেদনকারীদের আবেদন ফরমে সঠিক তথ্য প্রদান করতে হবে।
৩. আবেদনকারীরা “ভিডব্লিউবি” কার্যক্রমের জন্য নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবেদন করতে হবে।
৪. যে সমস্ত আবেদনকারী গত বছরের অপেক্ষমান তালিকায় ছিলেন, তারা এবার অগ্রাধিকার পাবেন।
উপসংহার
ভিজিডি কার্ড ২০২৫-২০২৬ চক্রের আবেদন প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি বাংলাদেশে দরিদ্র ও প্রান্তিক নারীদের সহায়তার জন্য একটি বড় পদক্ষেপ। আপনি যদি ভিজিডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে চান, তবে এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য আপনার আবেদন পদ্ধতি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সমস্ত শর্তাদি মেনে আবেদন করুন।
অতএব, আমরা আশা করি এই ব্লগটি আপনাদের ভিজিডি কার্ডের আবেদন প্রক্রিয়া এবং যোগ্যতা সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করেছে। আপনি যদি আবেদন করতে চান, তবে দ্রুত আবেদন করুন এবং এই সুযোগটি কাজে লাগান।

প্রতিবন্ধী বিডি একটি সেবামূলক ওয়েবসাইট যেখানে বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী শ্রেনীর নাগরিকদের প্রদানকৃত ভাতা ও অন্যান্য সেবা সমূহ নিয়ে তথ্য প্রদান করে থাকে। এছাড়াও সরকার দ্বারা প্রদানকৃত অন্যান্য ভাতা ও সুযোগ সুবিধা নিয়েও জানানো হয়ে থাকে। তবে এটা কোনো সরকারি ওয়েবসাইট নয়।
ভিজিডি কাড অনলাইন শুরু হবে কবে
বিভাগঃ রংপুর
জেলাঃ কুড়িগ্রাম,
থানাঃ ফুলবাড়ী
১ জানুয়ারি ২০২৫ থেকে শুরু
আমার নাম মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন আমি খুব কষ্টে আছি
ইউনিয়ন পরিষদে যোগাযোগ করুন
ভিজিডি কাড অনলাইন শুরু হবে কবে
বিভাগঃ ময়মনসিংহ
জেলাঃ ময়মনসিংহ,
থানাঃ মুক্তাগাছা
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে একবার যোগাযোগ করেন
ভিজিডি কাড অনলাইন শুরু হবে কবে
বিভাগঃ ময়মনসিংহ
জেলাঃ জামালপুর
থানাঃ দেওয়ানগঞ্জ
আবেদনের সময় আপাতত শেষ। আবার শুরু হলে জানিয়ে দেয়া হবে