সুপ্রিয় পাঠক পাঠিকাবৃন্দ প্রতিবন্ধী বিডি ডট কম এর পক্ষ থেকে আন্তরিক সালাম ও ভালবাসা গ্রহণ করবেন। আজ আমার প্রতিবন্ধী ভাই বোনদের জন্য একটি দারুন সংবাদ নিয়ে হাজির হলাম। বাংলাদেশ সরকারের যুব ও ক্রিড়া মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ্য যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বিনামুল্যে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষন প্রদানের আয়োজন করেছে। আমরা যারা প্রতিবন্ধী ছেলে মেয়ে আছি এবং অনলাইন থেকে ইনকাম করতে চাই।
আমাদের জন্য এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ। আমরা বিনামুল্যে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষন গ্রহণ করে নিজেদের দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে পারব। বর্তমানে চাকরির বাজার অত্যান্ত প্রতিযোগীতাপুর্ণ, এবং প্রতিবন্ধী ছেলে মেয়েদের চাকরি পাওয়াটা আরও অনেক বেশি কঠিন। তাই আমাদের উচিত নিজেদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিজেরাই সুষ্ট্রি করা। আর ফ্রিল্যান্সিং হতে পারে আমাদের এই ইচ্ছা পুরণের চাবিকাঠি।
যেহেতু ঘরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করা যায়, তাই শারীরিক প্রতিবন্ধীরাও অনায়াসে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন। আমাদের দেশে এখনও এমন অনেক বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে প্রতিবন্ধীরা কাজের জন্য গেলে তাদের বলা হয় প্রতিবন্ধীদের কাজ দিলে প্রতিষ্ঠানের বদনাম হবে। এমন ব্যস্তবতায় প্রতিবন্ধীদের উচিত চাকরির আশায় না থেকে ফ্রিল্যান্সিং শিখে নিজের কর্মসংস্থান নিজেই গড়া।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষন ২০২৫
বাংলাদেশ সরকার বেকার যুবক যুবতীদের দক্ষ মানব সম্পাদ হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্য কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম হল যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত প্রকল্পসমূহ। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর শিক্ষিত বেকার যুবক যুবতিদের বিভিন্য প্রশিক্ষন প্রদান করে। এবং প্রশিক্ষন শেষে ঋণ সহায়তা দেয়। এতে অসংখ্য বেকার তরুন তরুনির কর্মসংস্থান সৃষ্ট্রি হয়েছে।
বিশেষ করে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর শিক্ষিত যুবক যুবতীদের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষন দেয়। তারই ধারাবাহিকতায় ২০২৫ সালে প্রদেয় ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষন প্রদানের জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের নিকট থেকে আবেদন আহবান করেছে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর। এ লক্ষ্যে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, যুব ও ক্রিড়া মন্ত্রণালয়ের আওতাধীণ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর কর্তৃক ব্যস্তবায়নাধীন শিক্ষিত কর্মপ্রত্যশিদের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষন প্রদান শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় কর্মপ্রতাশিদের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষন প্রদান করা হবে। দেশের ১৬ টি জেলায় এই প্রশিক্ষন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। আগ্রহী প্রার্থীদের অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
কোন কোন জেলায় প্রশিক্ষন দেয়া হবে
সারা বাংলাদেশের যে কোন জেলার বাসিন্দাগণ এই প্রশিক্ষন গ্রহণ করতে পারবেন না। কারণ সারা দেশে এই প্রশিক্ষনটি দেয়া হবে না। কেবলমাত্র ১৬ টি জেলায় এই প্রশিক্ষন প্রদান করা হবে। এবং উক্ত ১৬ জেলার স্থায়ি বাসিন্দাগণই এই প্রশিক্ষনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
অন্য সাধারণ ব্যক্তিদের পাশাপাশি প্রতিবন্ধীরাও আবেদন করতে পারবেন। যে সকল জেলায় প্রশিক্ষন প্রদান করা হবে তা হল: ঢাকা, গোপালগঞ্জ, গাজীপুর, শরিয়তপুর, মাদারিপুর, রাজবাড়ী, কুমিল্লা, লক্ষ¥ীপুর, চাঁদপুর, রাজশাহী, নড়াইল, ঠাকুরগাঁও, ভোলা, শেরপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ।
আবেদন ফি কত টাকা
এই প্রশিক্ষনে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। তবে আবেদন করার জন্য কোন ফি প্রদান করতে হবে না। কোন ব্যক্তি যদি আপনাদের বলে প্রশিক্ষনে আবেদন করতে টাকা লাগবে তবে বুঝে নেবেন তিনি মিথ্যা কথা বলছেন। তবে আপনি যদি কোন কম্পিউটারের দোকান থেকে আবেদন করেন তবে দোকানদার তার পারিশ্রমীক হিসেবে সামান্য টাকা নিতে পারে।
প্রশিক্ষন ভাতা কত টাকা
যে সকল ছেলে মেয়েরা এই ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষন গ্রহণ করবে তাদের প্রতিদিন ২০০ টাকা হারে ভাতা প্রদান করা হবে। তবে প্রতিদিন কিংবা প্রতি মাসে প্রশিক্ষন ভাতার টাকা দেয়া হবে না। প্রশিক্ষন শেষে প্রশিক্ষন ভাতার টাকা এক সাথে পরিশোধ করা হবে। তবে কোন প্রশিক্ষনার্থী যদি এক বা একাধিক দিন প্রশিক্ষন ক্লাসে অনুপস্থিত থাকে তবে সে যে কয় দিন অনুপস্থিত ছিল সে কয় দিনের বিপরিতে প্রতিদিন ২০০ টাকা হারে প্রশিক্ষন ভাতা কর্তন করা হবে।
আবেদন করবেন যেভাবে
এই ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষন গ্রহণ করতে চাইলে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। আবেদন করতে এখানে ক্লিক করুন। লিংকে ক্লিক করার পর একটি ওয়েব পোর্টালে প্রবেশ করবেন, সেখানে আপনার নিকট থেকে কিছু তথ্য চাওয়া হবে। সকল তথ্য সঠিক ভাবে প্রদান করে সাবমিট করলেই আবেদন জমা হবে। পরবর্তিতে কবে কোথায় আসতে হবে তা এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে।
আবেদনের যোগ্যতা
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের দেয়া বিনামুল্যে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষন গ্রহণের জন্য আবেদন করতে চাইলে কমপক্ষে আপনাকে এইচএসসি বা সমমানের পরিক্ষায় উত্তির্ণ হতে হবে। এর কম শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলে আবেদন করতে পারবেন না।
আবেদনের শেষ তারিখ
আমরা আগেই বলেছি এই প্রশিক্ষনে অংশগ্রহণ করতে চাইলে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। আবেদন শেষ হবে আগামী ২২ মার্চ ২০২৫ তারিখে। এই সময়ের মধ্যেই সকল আগ্রহী ব্যক্তিদের নির্ধারিত প্রকৃয়া অনুসরণ করে আবেদন সম্পন্য করতে হবে। পরবর্তিতে আর আবেদন করার সুযোগ দেয়া হবে না।

প্রতিবন্ধী বিডি একটি সেবামূলক ওয়েবসাইট যেখানে বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী শ্রেনীর নাগরিকদের প্রদানকৃত ভাতা ও অন্যান্য সেবা সমূহ নিয়ে তথ্য প্রদান করে থাকে। এছাড়াও সরকার দ্বারা প্রদানকৃত অন্যান্য ভাতা ও সুযোগ সুবিধা নিয়েও জানানো হয়ে থাকে। তবে এটা কোনো সরকারি ওয়েবসাইট নয়।