মুক্তিযোদ্ধা ভাতা সেপ্টেম্বর ২০২৪ সালের আর্থিক মঞ্জুরি জ্ঞাপন
সরকার বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা সেপ্টেম্বর ২০২৪ মাসের জন্য মুক্তিযোদ্ধা সম্মানি ভাতা হিসেবে মোট ২,৫১,৭৭৯ জন উপকারভোগীর জন্য ৩৯২ কোটি ৫ লক্ষ ১৯ হাজার ১৩ টাকা অনুমোদন করেছে।
এই ভাতা প্রদান প্রক্রিয়া ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেখানে প্রাতিষ্ঠানিক কোড ১৫৭০১ এর অধীনে “মুক্তিযোদ্ধা সম্মানি ভাতা কার্যক্রম” নামে একটি বিশেষ প্রকল্প চালু রয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে নগদ সামাজিক সহায়তা সুবিধাদি হিসেবে ‘কল্যাণ অনুদান’ খাতে ৪৭২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা প্রদান করতে Management Information System (MIS) এর মাধ্যমে সমস্ত উপকারভোগীদের তথ্য সংরক্ষণ করা হয়েছে। এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে Government to Person (G2P) পদ্ধতির মাধ্যমে Electronic Fund Transfer (EFT) প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভাতা প্রদান করা হবে। সেপ্টেম্বরে মোট ২,৫১,৭৭৯ জন উপকারভোগীকে তাদের ভাতা প্রদানের জন্য এই বিশাল অর্থ মঞ্জুর করা হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা ভাতার আর্থিক মঞ্জুরি (সেপ্টেম্বর, ২০২৪ আপডেট)
২০২৪ সালের আগস্ট মাসে ২,৫১,৭৭৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্য সরকার সম্মানি ভাতা ছাড় করেছে। এটির আর্থিক মঞ্জুরি হয়েছে ৩৯২ কোটি ০৫ লক্ষ ১৯ হাজার ০১৩ টাকা। সরকারের পক্ষ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এই অর্থ মঞ্জুরির চিঠিটি প্রকাশ করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয় যে, এই অর্থ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি ভাতা হিসেবে প্রদান করা হবে।
ভাতার প্রদানের প্রক্রিয়া
সরকারের বাজেট থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি ভাতা প্রদান করা হয় ‘গভমেন্ট টু পারসন’ (G2P) পদ্ধতির মাধ্যমে। এই প্রক্রিয়ায় এমআইএস (ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম) ব্যবহৃত হয়। ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (EFT) পদ্ধতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এই অর্থ জমা করা হয়। এতে নিশ্চিত করা হয় যে, প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাদের ভাতার টাকা পেয়ে যাবেন।
জেলা ও উপজেলা ভিত্তিক বিভাজন
প্রত্যেকটি জেলা ও উপজেলাভিত্তিক বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা এবং তাদের ভাতার পরিমাণ চিঠিতে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, কক্সবাজার, ঢাকা, দিনাজপুর, ফরিদপুর, গাইবান্ধা, হবিগঞ্জ, যশোর, খাগড়াছড়ি, কুড়িগ্রাম, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর, নেত্রকোনা, পাবনা প্রভৃতি জেলাগুলোর মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রতিটি জেলাতে কতজন মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন, তাদের সম্মানি ভাতার পরিমাণ এবং তাদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা ভাতা সেপ্টেম্বর ২০২৪ কার্যক্রমে শর্তাবলী এবং নির্দেশনা
১) সম্মানি ভাতা ও উৎসব ভাতা বিতরণ নীতিমালা: ভাতা বিতরণের জন্য নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম ও বিধান অনুসরণ করতে হবে। যদি কোনো ভুল বা অনিয়ম হয়, তাহলে যিনি এই তথ্যগুলি এন্ট্রি করেছেন বা অনুমোদন করেছেন, তিনি দায়ী হবেন।
২) ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেট থেকে ব্যয়: মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি ভাতা ‘কল্যাণ অনুদান’ নামে একটি নির্দিষ্ট খাত থেকে দেওয়া হবে, যা ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে অন্তর্ভুক্ত।
৩) মাসিক সম্মানি ভাতা: জীবিত মুক্তিযোদ্ধারা মাসে ২০,০০০ টাকা করে পাবেন। আর মৃত মুক্তিযোদ্ধাদের ওয়ারিশরা সেই ২০,০০০ টাকার নির্দিষ্ট অংশ পাবেন, যা ২০২০ সালের ভাতা বিতরণ আদেশ অনুযায়ী নির্ধারিত।
৪) শহিদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে: শহিদ, যুদ্ধাহত ও খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা এই ভাতা পাবেন না, কারণ তাদের জন্য আলাদা নিয়ম রয়েছে।
৫) ব্যাংকের মাধ্যমে তথ্য এন্ট্রি এবং অনুমোদন: মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য সরকারি ওয়েবসাইটে (mis.molwa.gov.bd) এন্ট্রি করা হয়েছে এবং অনুমোদন করা হয়েছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে তাদের প্রাপ্য টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা সোনালী ব্যাংক ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংক মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।
৬) ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভাতা বিতরণ: মন্ত্রণালয় ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভাতা বিতরণের ক্ষমতা রাখে। একবার ইলেকট্রনিকভাবে ভাতা প্রদান করা হলে, আবার নতুন করে বিতরণের প্রয়োজন নেই।
প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা
যে সমস্ত মুক্তিযোদ্ধারা মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের সম্মানি ভাতা তাঁদের ওয়ারিশদের মধ্যে বণ্টন করা হবে। চিঠিতে এ বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে নিশ্চিত করা যায় যে, প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের ওয়ারিশগণও তাদের প্রাপ্য সম্মানি ভাতা ঠিকমত পেয়ে যান।
মুক্তিযোদ্ধা ভাতার পেরোল সিস্টেম
এমআইএস পেরোল সিস্টেম ব্যবহার করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুবিধাসমূহ নির্ধারণ করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং জেলা প্রশাসক এই পেরোল সিস্টেমের মাধ্যমে ভাতার পরিমাণ নির্ধারণ করেন এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক এই পেরোল সিস্টেমের মাধ্যমে নির্ধারিত অর্থ সংশ্লিষ্ট মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে।
মুক্তিযোদ্ধা ভাতা সেপ্টেম্বর মাসের সম্মানি ভাতার অর্থ ছাড়করণ
এই চিঠির মূল বিষয় হলো সেপ্টেম্বর ২০২৪ মাসের সম্মানি ভাতা প্রদানের জন্য ৩৯২ কোটি টাকার অর্থ ছাড়করণ করা হয়েছে। সরকারের এই উদ্যোগের ফলে ২,৫১,৭৭৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা তাদের সম্মানি ভাতা গ্রহণ করতে পারবেন। অর্থ ছাড়করণের পর থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হওয়া শুরু হয়েছে।
উপসংহার
বীর মুক্তিযোদ্ধারা দেশের স্বাধীনতার জন্য যে অবদান রেখেছেন, তার স্বীকৃতি হিসেবে সরকার তাদের নিয়মিত সম্মানি ভাতা প্রদান করে আসছে। মুক্তিযোদ্ধা ভাতা সেপ্টেম্বর ২০২৪ – মাসে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩৯২ কোটি টাকার ভাতা ছাড়করণের উদ্যোগটি তাঁদের প্রতি সরকারের কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। সরকারের এই পদক্ষেপ মুক্তিযোদ্ধাদের অর্থনৈতিক সহায়তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।