প্রতিবন্ধী কার্ডের সুযোগ সুবিধা সুবর্ণ নাগরিক কার্ডের সুযোগ সুবিধা
প্রতিবন্ধী কার্ডের সুযোগ সুবিধা কি, কোন কোন কাজে প্রতিবন্ধী কার্ড ব্যবহার করা যায়। প্রতিবন্ধী কার্ড থাকলে চাকরিতে কোন সুযোগ সুবিধা পাওয়া যাবে কি না। সরকারি বেসরকারি গণপরিবহনে কোন সুযোগ সুবিধা পাওয়া যাবে কি না সে সকল বিষয়ে এই পোস্টে আলোচনা করা হবে। এই পোস্টটি সম্পুর্ণ পড়লে প্রতিবন্ধী কার্ডের যাবতীয় সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
Protibondhi carder sujog subidha
প্রতিবন্ধী কার্ড কি?
প্রতিবন্ধী কার্ড গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদপ্ত প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পরিচয়পত্র। সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে সরকার এই কার্ড বিতরণ করে,বর্তমানে এই কার্ড সুবর্ণ নাগরিক কার্ড হিসেবেও পরিচিত।
প্রতিবন্ধী কার্ড কবে থেকে চালু হয়?
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ২০০৫ সাল থেকে হাতে লেখা প্রতিবন্ধী কার্ড প্রদান শুরু করে। তবে এই প্রতিবন্ধী জরিপ ত্রæটিপূর্ণ ছিল, তাই সরকার ২০১৩ সালে নির্ভুল ও আধুনিক প্রতিবন্ধী জরিপ সুরু করে এবং প্রতিবন্ধীদের স্মার্ট প্রতিবন্ধী কার্ড প্রদান করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এ লক্ষ্যে সরকার অনলাইন ভিত্তিক প্রতিবন্ধী জরিপ চালু করে, ফলে বর্তমানে একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে খুব সহজেই প্রতিবন্ধী কার্ড পাবার আবেদন করতে পারেন।
প্রতিবন্ধী কার্ডের সুবিধাঃ
প্রতিবন্ধী কার্ডের সুযোগ সুবিধা হল, সরকারি চাকরিতে ১০ শতাংশ কোটা, অর্থাত প্রতিটি সরকারি নিয়োগে ১০০ জনকে নিয়োগ করলে ১০ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে নিয়োগ করতে হবে। তবে মানসিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা এই কোটা সুবিধার আওতাভুক্ত হবেন না।
সরকারি গণপরিবহণ যেমন বাংলাদেশ রোড ট্যানেসপোর্ট কর্পরেশন (বিআরটিসি) -এর বাসে হাফ ভাড়া সুবিধা। যথা মনে করা যাক রাফিক সাহেব ঢাকা মিরপুর ২ থেকে সাভার বাসস্টান্ডে বাসে করে আসবেন, বাস ভাড়া যদি ১০০ টাকা হয় তবে একজন কার্ডধারি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হাফ ভাড়া ৫০ টাকায় মিরপুর ২ থেকে সাভার বাসস্টান্ড-এ আসতে পারবেন।
সরকারি লঞ্চেও এই একই রকম হাফ ভাড়া সুবিধা প্রতিবন্ধী কার্ডধারি ব্যক্তি পেয়ে থাকেন। তাছাড়াও সরকারি বেসরকারি ট্রেনেও হাফ ভাড়া সুবিধা পায় প্রতিবন্ধীরা এজন্য ট্রেনের টিকেট কাটার সময় সুবর্ণ কার্ড (প্রতিবন্ধী কার্ড)-এর অনুলিপি সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটলে এই হাফ ভাড়া সুবিধা পাওয়া যাবে না। বর্তমানে হাফ ভাড়া সুবিধা সুধুমাত্র টিকেট কাউন্টারেই পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সম্পুর্ন বিনামুল্যে বিভিন্য প্রশিক্ষন দিয়ে থাকে যেমনঃ মাইক্রসফ্ট অফিস অ্যপলিকেশন,এক্সেল,পাওয়ার পয়েন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন,ভিডিও এডিটিং,আর্টিকেল রাইটিং ইত্যাদি। এসকল প্রশিক্ষন গ্রহণ করে একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি অনলাইনের মাধ্যমে ফ্রিল্যাংসিং করে স্বাবলম্বি হতে পারবেন। তাছারা বিভিন্য আইটি প্রতিষ্ঠানেও চাকরি করতে পারবেন।
বর্তমান যুগ প্রযুক্তি নির্ভর যুগ সরকারি বেসরকারি চাকরি পেতে কম্পিউটার দক্ষতার কোন বিকল্প নেই তাই সকল প্রতিবন্ধীদের অবশ্যই কম্পিউটার দক্ষতায় দক্ষ হওয়া অতিব জরুরি।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল প্রতি বছর যুব প্রতিবন্ধী আইটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে, এটি একটি জাতীয় প্রতিযোগিতা। যে সকল প্রতিবন্ধী ব্যক্তি কম্পিউটার চালনায় দক্ষ তাঁরা এই আইটি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার সযোগ পায়। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করতে প্রতিবন্ধী কার্ডর প্রয়জন হয়।
অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা প্রকল্প: বাংলাদেশ সরকার অসচ্ছল প্রতিবন্ধীদের মাসিক ৮৫০ টাকা হারে ভাতা প্রদান করে, তিন মাস পর পর ২৫৫০ টাকা মোবাইল ব্যংকিং সার্ভিসের মাধ্যমে (বিকাশ,নগদ)এর মাধ্যমে প্রদান করে। এই ভাতা সুবিধা পাওয়ার জন্য অবশ্যই প্রতিবন্ধী কার্ড থাকতে হবে।
অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের স্বাবলম্বি করতে ঋণ সুবিধা: বাংলাদেশ সরকার জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে খুদ্র ঋণ দিয়ে থাকে। ব্যক্তি পর্যায়ে ১০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ্ঋণ সহায়তা পেয়ে থাকে। এই সুবিধা পাবার জন্য ঋণ গ্রহণে আগ্রহী ব্যক্তির প্রতিবন্ধী কার্ড থাকতে হবে। প্রতিবন্ধী কার্ড না থাকলে উক্ত ঋণ সুবিধা পাবে না।
গরীব মেধাবি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি: অসহায় গরীব মেধাবী প্রতিবন্ধী ছাত্র ছাত্রীদের বাংলাদেশ সরকার সমাজেসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদান করে, প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত প্রতিমাসে ৭৫০ টাকা হারে তিন মাস পর মোবাইল ব্যংকিং সার্ভিসের মাধ্যমে ২২৫০ টাকা প্রদান করা হয়।
সুবর্ণ কার্ডের সুযোগ সুবিধা Suborno carder sujog subidha
৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে দ্বশম শ্রেণী পর্যন্ত প্রতিমাসে ৮৫০ টাকা হারে তিন মাস পর ২৫৫০ টাকা মোবাইল ব্যংকিং সার্ভিসের মাধ্যম প্রদান করা হয়। ইন্টার মিডিয়ে পর্যায়ে প্রতিমাসে ১০০০ টাকা হারে তিন মাস পর ৩,০০০ টাকা মোবাইল ব্যংকিং মার্ভিস (বিকাশ ও নগদ)এর মাধ্যমে প্রদান করা হয়। অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ে মাসিক ১২০০ টাকা হারে ৩,৬০০ টাকা মোবাইল ব্যংকিং সার্ভিসের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
এসকল সুযোগ সুবিধা ছাড়াও প্রতিবন্ধী কার্ডধারী ব্যক্তিগণ বেসরকারি প্রতিবন্ধী সংস্থা থেকে বিভিন্য সুযোগ সুবিধা নিতে পারবেন। যেমন নগদ আর্থীক সহায়তা,খাদ্য সহায়তা,শীত কালে শীতবস্ত্র গ্রহণ,বিভিন্য প্রশিক্ষন গ্রহণ সহ আরও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা।
প্রিয় প্রতিবন্ধী পাঠক, আপনার যদি প্রতিবন্ধী কার্ড না থাকে তবে আর দেরি না করে আজই প্রতিবন্ধী কার্ড পাবার প্রকৃ য়া শূরু করুন।
প্রতিবন্ধী কার্ড কি ভাবে পাওয়া যায়?
আপনি যদি সত্যিকারের প্রতিবন্ধী হন তবে প্রতিবন্ধী কার্ড পাবার জন্য আপনার ওয়ার্ড/ইউনিয়নের সমাজসেবা মাঠকর্মির সাথে আজই যোগাযোগ করুন। কিংবা শহর/উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরে যোগাযোগ করুন। তারাই আপনাকে প্রতিবন্ধী কার্ড পাবার বিস্তারিত প্রকৃয়া জানিয়ে দেবে। প্রতিবন্ধী বিডি ডট কম অতি দ্রæতই অনলাইনে প্রতিবন্ধী কার্ডের আবেদন সংক্রান্ত একটি পোস্ট প্রকাশ করবে। যেখানে ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যম প্রতিবন্ধী কার্ড পাবার যাবতীয় প্রকৃয়া নিয়ে আলোচনা করা হবে। উক্ত পোস্টটি পড়লে একজন প্রতিবন্ধী ঘরে বসেই প্রতিবন্ধী কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবে বলে আমরা আশা করছি।
প্রিয় পাঠক, আজ এ পর্যন্তই সকলে ভাল থাকবেন সুস্থ্য থাকবেন এবং নিয়মিত ভিজিট করবেন প্রতিবন্ধী বিডি ডট কম সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আমি আমার ছেলের ভাতার জন্য আবেদন করেছি কিন্তু এখন এটার অনলাইন কপি বাহির করি নাই,,,,এখন কোথাও খুঁজে পাইতেছি না
একাউন্টে লগিন করেন